মাল্টিপল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার বা বহুব্যক্তিত্ব মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে একটি মানসিক রোগ যা রোগীর ব্যক্তিত্বে দ্বৈততা আনয়ন করে থাকে। ফলে একে দ্বৈতসত্তাজনিত সমস্যাও বলা হয়ে থাকে। রোগী নিজের স্মৃতি, ব্যক্তিত্ব ও বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলে সাময়িককালের জন্য পরিচিত অথবা সম্পূর্ণ অলীক কোন স্মৃতি, ব্যক্তিত্ব বা বৈশিষ্ট্য ধারণ করে থাকে। একাধিক ব্যক্তিত্বে বেলায় Dissociative Identity Disorder বলা হয়।
ডিসোসিয়েটিভ আইডেন্টিটি ডিসঅর্ডার
প্রতিশব্দ,
মাল্টিপল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার
শিল্পীর দৃষ্টিতে ডিসোসিয়েটেড পার্সোনালিটি দশায় অবস্থিত মানুষ
বিশেষত্ব
সাইকিয়াট্রি
রোগের লক্ষণ
Dissociative Identity Disorder-এর রোগীদের মাঝে বেশ কিছু অন্যান্য মানসিক সমস্যাও দেখা যায়। এই রোগের লক্ষণগুলোর মাঝে রয়েছে-
- রোগীর মাঝে একের অধিক ব্যক্তিত্বের দেখা পাওয়া যাবে। প্রতিটি ব্যক্তিত্বের আলাদা আলাদা বয়স, লিঙ্গ ও গোত্র থাকবে। এমনকি তাদের স্বতন্ত্র ভঙ্গিমা, অঙ্গভঙ্গি ও কথা বলার ধরন থাকবে। অনেক সময় কাল্পনিক ব্যক্তিত্বটি কোনো প্রাণীরও হতে পারে!
- ব্যক্তিত্বগুলোর রোগীর উপর আধিপত্য দেখা যায়, যাকে অনেকে ভূতে ধরা বলে থাকে।
- রোগীর একটি ব্যক্তিত্ব অন্য ব্যক্তিত্বগুলোকে মনে রাখতে পারে না।
- রোগী অনেক সময় অনুভব করে সে তার শরীর থেকে আলাদা হয়ে গেছে ।
- সে তার ব্যক্তিগত জিনিসগুলো ভুলে যেতে থাকে, যা সাধারণ ভুলে যাওয়ার আওতায় পড়ে না ।
- তার মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা ও প্রচুর পরিমাণে হতাশা থাকে।
- মুড সুইং হয়।
- ঘুমের সমস্যা দেখা যায়, যেমন- ঘুম হয় না, ঘুমের মাঝে ভয় পাওয়া, ঘুমের মাঝে হাঁটা ইত্যাদি ।
- অস্থিরতা, প্যানিক অ্যাটাক ও বিভিন্ন ধরনের ফোবিয়া দেখা যায়; যেমন- পুরনো স্মৃতি মনে পড়া এবং সেগুলোর প্রতি বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখানো।
- বিভিন্ন ড্রাগের প্রতি আসক্তি দেখা যায়।
- অনেক সময় হ্যালুসিনেশন হতে দেখা যায়।
- খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম।
জটিলতা - Suicide, self harm
স্থিতিকাল -দীর্ঘকালীন
কারণ - শৈশবকালীন ট্রমা, থেরাপি
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি - ক্লিনিকাল বিশ্লেষণভিত্তিক
পার্থক্যমূলক রোগনির্ণয়
মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার, বাইপোলার ডিসঅর্ডার, পিটিএসডি, সাইকোটিক ডিসঅর্ডার, পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার, কনভার্সন ডিজঅর্ডার[১]
চিকিৎসা
মাল্টিপল পারসোনালিটি ডিজঅর্ডারের চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হচ্ছে বিচ্ছিন্ন সত্ত্বাগুলোকে একটি সত্ত্বায় একীভূত করা। কিন্তু Dissociative Identity Disorder কখনই সম্পূর্ণভাবে নিরাময়যোগ্য নয়। তাই আজীবন মানসিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকাই এর একমাত্র চিকিৎসা। এর কার্যকরী চিকিৎসাগুলো হচ্ছে talk therapy অথবা psychotherapy, hypnotherapy, adjunctive therapies অথবা art or movement therapy। মাল্টিপল পারসোনালিটি ডিজঅর্ডাররের নির্ধারিত কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি নেই এবং কোনো ওষুধের মাধ্যমে এর নিরাময় সম্ভব নয়। এর উপসর্গ হিসেবে যে রোগগুলো দেখা দেয়; যেমন- ডিপ্রেশন, অস্থিরতা, ট্রমা- এগুলোর চিকিৎসার মাধ্যমে এবং নিয়মিত কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে এর কিছুটা নিরাময় পাওয়া যায়।
মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিল্যুশনের চরম মাত্রায় কিছু রোগীদের সাথে এমন ঘটনা ঘটে থাকে। রোগী নিজেকে অন্য কেউ ভাবতে শুরু করে। কথা বার্তা, চালচলন, আচার আচরণ ইত্যাদি সবকিছুতেই ভিন্নতা আসে।
সনাতন বিশ্বাসীদের মতে জ্বিন বা ভূত দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার ফলেই এমনটা হয়ে থাকে। প্যারাসাইকোলজিস্টদের মতানুযায়ী Anti Human কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে এমনটা হতে পারে।
ডেমো আর্টিকেল - ক্রেডিট: মেন্টাল হেলথ কেয়ার